ফটো পোস্ট প্রসেসিং, ফটো ম্যানিপুলেশন আর ফটো এডিটিং এই তিনটার বিশদ বিবরণ দেইঃ
১) ফটো পোস্ট প্রসেসঃ ফটো তোলার পর আপনি ডিস্প্লে তে যে ছবিটা দেখেন তা প্রসেসড ফটো। কারন ক্যামেরা তার সেন্সর এর “র” ফাইল প্রসেস না করলে আপনি ডিস্প্লে তে দেখতে পারতেন না। এইতা পুরানো দিনের ফিল্ম ক্যামেরার ফিল্ম নেগেতিভে ট্রান্সফার এর ডিজিটাল ভার্সন। আগে লোকে ফটো তুইলা রিল পুরা ঘুরাইয়া ভিতরে ধুকাইয়া স্টুডিও তে দিত অথবা নিজেদের ডার্করুম প্রসেস করে নেগেটিভ বানাত সেই কাজটা এখন ডিজিটাল ক্যামেরা করে দেয়। এইতা হইল ফটো প্রসেসের একেবারে প্রথম অধ্যায়। এর পর ফটোগ্রাফার যখন “র” ফাইল নিয়ে এ্যাডবি বা অন্য প্রসেসিং সফটওয়্যার দিয়ে জেপেইজ তে ট্রান্সফার করে তখন দ্বিতীয় লেভেল এর প্রসেস হয়। এইটা হল নেগেটিভ কে স্টুডিও তে প্রিন্ট করার অথবা নিজের ডার্ক রুম এ প্রিন্ট করার সমান। এই দুই লেভেল এর মাঝখানে ফটোগ্রাফাররা ফটোর ব্রাইট নেস, কন্ট্রাস্ট, কালার টোন ইত্যাদি চেঞ্জ করে এ্যাডবি অথবা এই টাইপ এর সফটওয়্যার ব্যবহার করে। ফিল্ম ফটোগ্রাফির সময় এইটা স্টুডিও তেও করত এবং এখনও ফটো প্রিন্ট এর সময় আর যারা নিজেদের ডার্ক রুম ব্যবহার করতেন তারাও করতেন বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করে। গ্রেইন তৈরি করতেন বালি ব্যবহার করে। যেটা এখন আমরা ফটোশপ অথবা লাইট রুম ইউজ করে করি। এইটা করতে পারা একজন এ্যডভান্সড ফটোগ্রাফার এর জন্যে অবশ্যই জরুরি।
ফটো আবার প্রি প্রসেস ও আছে। ধরেন আপনি পোলারাইজ ফিল্টার ইউজ করলেন আকাশ টা নীল দেখানর জন্য, অরেঞ্জ ফিল্টার ইউজ করলেন ফটো ওয়ার্ম করার জন্যে। আগে ফটোগ্রাফার রা ক্যামেরার ব্যাগ এ ফিল্টার নিয়া ঘুরত। এখন ঘুরে না কারন এইগুলি পোস্ট প্রসেস এর সময় করা যায়। আপনি এখন ও করতে পারেন। যেমন অনেকেই এখন সিপিএল ফিল্টার রাখেন ল্যান্ডস্কেপ এর জন্য। এখন ফিল্টার ইউজ করে তোলা ফটো কে আপনি নিশ্চয় বলবেন না ভাই আপনার ফটো এডিটেড, অরজিনাল না। তাহলে পৃথিবীর সব ফটোগ্রাফার এর ফটো “এডিটেড” ফটো। সবার ফটো দেখা ছাইরা দিতে হবে। ইনফ্যাক্ট “র”তে ছবি তুইলা ক্যামেরার মধ্যেই রাইখা দিতে হবে আর দেখেতে হবে না। দেখেলেই এডিটেড ফটো দেখা হয়ে যাবে।
২) ফটো ম্যনিপুলেশনঃ সোজা বাংলা কথায় এইটা হইল ফটো কাইটা আরেক ফটো তে জোড়া দেওয়া। একজনে কল্লা আরেক জন রে লাগানো, মোটা রে চিকন করা অথবা চিকন কে মোটা, ব্যাকগ্রউন্ড এ উটকো ঝামেলা থাকলে মুইছা ফালানো এইসব আরকি। ফিল্ম এর যুগে ও এইটা ছিল। তখন মানুষ এই নেগেটিভ কে ম্যানিপুলেট করে সেইটা থেকে প্রিন্ট দিত। খুবই সুক্ষ কাজ ছিল।
৩) ফটো এডিটঃ কথাটা এক দিক দিয়া ভুল। কিন্তু এখন ফটোর পোস্ট প্রসেস কে ফটো এডিট বলে। আচ্ছা বলেন তো পত্রিকার ফটো এডিটর এর কাজ কি? সারাদিন ফটোশপ এই বইসা ফটো এডিট করা? হি হি, আপনে জানেন কচু। ওনার কাজ হচ্ছে ফটো বাছাই করা। তাই, কেউ যদি নিজের ফটোর কালার টোন, ব্রাইটনেস, কন্ট্রাস্ট, ঠিক করে ফটো কে সুন্দর করে তোলে তাহলে আমি বলব সেই লোক নিজেকে ফটোগ্রাফির আরেকটা সিঁড়ি বেয়ে উঠল। আর যিনি এখনও সরাসরি জেপেইজে ট্রান্সফার করে আপলোড করেন আর নিজের ঢোল নিজে বাজান যে আমি ফটো এডিট করিনা তিনি এখনও বোকার স্বর্গে বাস করছেন। পুরানা দিনের ফিল্ম ক্যামেরা দিয়া ফটো তুইলা স্টুডিও তে প্রিন্ট করতে দিয়া আল্লাহ আল্লাহ করা যাতে প্রিন্টটা ভাল হয় এর সাথে আপনার কোন পার্থক্য নাই। আর যিনি প্রসেসিং সফটওয়ার ইউজ করে ফটো সুন্দর করছেন consider him a advance photographer who print his own photo using his own darkroom. I salute him.
–শাহাদাত হোসেন
0 comments